আজ সবাই খুব নামায পরছে। হয়তো রাত জেগে পড়বে। আমার ছোটবেলার কথা মনে পরছে। শবেবরাত আসলেই বাসায় হালুয়া বানায় আম্মু। খিচুড়ি, মুরগি। রুটি বানানো হয়না। আমরা ছোটরা রোজা রাখতাম না, কিন্তু হালুয়ার জন্য পাগল ছিলাম। সকাল থেকে নানা বাসা থেকে হালুয়া আসা শুরু হতো। আমি আমার বোন আম্মুর বানানো হালুয়া দিয়ে আসতাম আসেপাশের বাসায়। আর আমি সারাদিন রান্না ঘরে!!!! হালুয়া খেতে !!!
এখন যেমন দেখি, আগে রাত টা এত শান্ত থাকত না।
সব জায়গায় একটা উৎসব উৎসব ভাব থাকত।
ধুম ধাম, ধুপ ধাপ, ভুম ভুম বোম পটকা ঝারবাতি এর যতরকম শব্দ থাকতে পারে সব শোনা যেত সেই রাত!!!! সন্ধ্যা হতেই শুরু হয়। সবার কান ফাটিয়ে দেবার অবস্থা হতো। তখন এ ব্যাপারটা খুব মজা লাগত। নিজে কখন না করলেও নিচে নেমে যেতাম সবাই আপুরা ভাইয়ারা আমার ফ্রেন্ডরা। আমার মনে আছে আমি খুব ভয় পেতাম আর খুব চুপ চাপ ছিলাম বলে বড় ভাইয়া আপুরা আমাকে ১টাও তারাবাতি দিত না। আমি দূর থেকে দেখতাম মুগ্ধ হয়ে !!!!!!
তখন না নিতে পারলেও ৩/৪ বছর আগে আমার ভাই কোথা থেকে যেন তারাবাতি কিনে নিয়ে আসছিল। সেই ১ম তারা বাতি হাতে নিয়েছিলাম।
রাতে এত বেশি শব্দ হত আমার মনে হয়না এমন অবস্থায় মন দিয়ে নামাজ পড়া কার পক্ষে সম্ভব। মানা করা হত কিন্তু কে শোনে কার কথা!!!!!!!!!!!!!!!! ছোটরা এত কিছু বোঝেনা। আনন্দ পাওয়াই প্রাধান্য থাকে তখন। বুঝতেই পারতাম না আমাদের কেন মানা করে বড়রা।
কি দিন ছিল সেসব!!!!!!
দুর্ঘটনাও হয়েছে অনেক। ১টা আপুর মুখে লেগেছিল। ২টা সেলাই পরেছে।
কয়েকবার পুলিশ চলে আসছিল। আসার পর দেখা গেল সব চুপ আর উধাও !!!!!!
তখন বুঝতাম না তাই ভাল লাগত। কিন্তু এখন বুঝি যে এমন করা ঠিক না।
এখন অনেকে মনে হয় ভুলেও গেছে সেই চকলেট বোমা, মরিচা, পটকা, তারাবাতি , আর কত নামের সেগুলোর কথা। এখন আর নানা রকম হালুয়া বানানো হয় না সবকিছুর এত দাম। এখন আর সবার বাসায় দেওয়াও হয় না!
আমাদের সবার মধ্যে একরকম প্রতিযোগিতা হতো কে কত বেশী রাত জেগে নামাজ পরতে পারে কত রাকাত নামাজ পরতে পারে!!!!! দাদার সাথে রাত জেগে নামাজ পরতাম আয়োজন করে। এমনি তে চা খেতে দেওয়া না হলেও সে রাতে চা খেতে পারতাম। কোরআন , আরও অনেক দোয়া পরা হতো। সকালবেলা মোনাজাত শেষে আর চোখ খুলে রাখা যেত না। পারলে জায়নামাযেই ঘুম!!!!! তারপর সারাদিন ঘুম দিতে হতো!!!!
বড় হয়ে জানলাম এমন কোন রাত আসলে নেই। তার অনেক যুক্তি। আমার বাসায় এখনও রাত জেগে নামায পড়া হয়। আমি কিছু নফল পড়ি কিন্তু আর রাত জাগা হয় না। আমি জানি না আমার পাপ হচ্ছে কিনা। কিন্তু শবে কদর আর শবে মেরাজে নামাজ পড়ি রাত জেগে। মেরাজে পড়ি কারন রাত টা সত্যি সব রাত থেকে আলাদা মনে হয় আমার কাছে। আর কদর রাত টা রহস্যময়!!!!!!!!!!!!!! শেষ ১০ রোজার বেজোড় রাতে!!!!! রাতে জেগে নাহলেও পড়ি যদি পাওয়া যায় সেই রাত আর আল্লাহ শুনতে পায় আমার কথা!!!!!!!!!!!!!!! ( জানিনা কোন দিন হয়ত জানতে পাব এই কথা টাও ভুল যে শেষ ১০ রোজার বেজোড় রাত গুলোতে পড়তে হয়!!!! )
আমার মনে হয় বছরে শুধু এই কটা দিন নামাজ পরে খুব বেশি কিছু উপকার হবেনা যদি না ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া না হয়। যারা আজ নামাজ পরছে আল্লাহ যেন তাদের দোয়া শোনে আমি তাই চাই। এই রাত থাকুক বা না থাকুক সবাই আল্লাহর কাছেইতো চাচ্ছে। তার কাছে যদি মন থেকে কিছু চাওয়া হয় তিনি তা ঠিকই দিয়ে থাকেন।
একটি ছেলে মায়ার বাধন ভেঙ্গে একা .....
১৪ বছর আগে
২৮ জুন, ২০১০ এ ২:২৩ AM
আপনার ব্লগের এই লেখাটি পরে সেই আগের দিনের পুরনো দিনের স্মৃতিগুলো আবার মনে পরে গেল। আপনার লেখাটা অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু, আপনার ব্লগের একটি সমস্যা আমার কাছে মনে হয়েছে। আপনার ব্লগের ফন্ট সাইজটি যদি একটু বড় করে দেন তাহলে অনেক ভালো হবে। কারণ, বাংলা লেখাগুলো এমনিতেই অনেক ছোট দেখা যায়। বড় করে দিলে অনেক ভালো লাগবে এবং পড়তে অনেক সুবিধা হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে,
৫ জুলাই, ২০১০ এ ৩:০৮ PM
হায় আল্লাহ!! শবে বরাত আবার কবে হইলো!!!
সুপ্তি আপু? এইটা কি পুরোনো লেখা????
৯ জুলাই, ২০১০ এ ১:৪৯ PM
হুম ভাইয়া পুরানো লেখা গুলো এখানে কপি করে রাখছি।
১৯ আগস্ট, ২০১০ এ ১:২৩ PM
রেগুলার আপডেট করা উচিত!!
template ভালো হইছে
২০ জুলাই, ২০১১ এ ৯:৩৭ PM
এই শবে-বরাতে এসে পড়লাম। মজার একটা ব্যাপার কি, শবে-বরাতের চিত্রটা যুগে যুগে একই আছে! দশ বছর আগেও যেমন, আগামী দশ বছর পরে এমনই থাকবে! এবার আমিও বুঝেছি নামাজে কেমন সমস্যা হয় পটকার শব্দে! সুরা ভুলে একাকার অবস্থা! :P
সুপ্তিপু,মজা পেলাম লেখায় :) ভালো থাকবেন। আর টেমপ্লেটস টা তো খুবই সুন্দর হয়েছে :D